সোমবার, ৩১ মে, ২০১০

সাধারণ হওয়াতে আমাদেরও কি পা চাটা বাধ্যতামূলক????

ছাত্ররাজনীতির কলুষিত অংশের থাবায় আজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জীবন প্রায় বিপন্ন যতটুকু বিপন্ন বাংলাদেশের নদীগুলো লোভী ও হিংস্র কিছু রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক আতেল দ্বারা । তারপরও চির ত্যাগী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানে কোন রঙ্গে কতটুকু অপচ্ছায়া তাদের শিক্ষাজীবনের উপর পড়বে (চির ত্যাগী বলার পেছনে উদ্দেশ্য একটাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবই ত্যাগ করে, শিক্ষকদের ক্লাস পাওয়া উৎসর্গ করে কারণ শিক্ষকরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় ব্যস্ত থাকেন নয়ত বিশেষ উদ্দেশ্যে সাধনে ছুটিতে থাকেন, শিক্ষার্থীরা নিজেদের সম্ভ্রমও হারিয়ে ফেলেন মহান শিক্ষক দ্বারা, অনিয়মিতভাবে আবার বিভিন্ন রঙ্গের দলীয় ক্রসফায়ারে জীবনও হারান, জীবনের সব ত্যাগ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই মনে হয় করে থাকে! )

এই অপচ্ছায়ার করাল গ্রাস হয়ত তারা ভর্তি হওয়ার সময় কর্পোরেট বিজ্ঞাপনের ন্যায় অতি ক্ষুদ্র ভাবে দেওয়া শর্ত প্রযোজ্য এর মতো কোন অদৃশ্য শর্ত সহ্য করেই শিক্ষাজীবন শেষ করছে বা করবে । আমাদের পূর্ববর্তী অগ্রজরাও রঙ্গের করতলে দুই চার বছর বলি দিয়ে শিক্ষা জীবন শেষ করেছে তাই বাংলাদেশের সকল ঘিলুওয়ালা মাথারাও চায় বাংলাদেশের সকল প্রজন্মও সেই ধারা অব্যাহত রাখুক নয়ত দেশের শিক্ষার মান বাড়বে না ।


আজকাল তো অনেক শিক্ষার্থী তো বলে বেড়ায়; গ্রামে গ্রীষ্মের দাবদাহে যখন বর্ষা চাইলাম তখন মেঘ আসলো আর তাই দেখে ব্যাঙেরা ভীষণ লম্পজম্প শুরু করে তাদের লম্পজম্পের আধিক্যে আর ঠেকা গেলো বরং গোখরা সাপই ভালো ছিল খোঁচা না দিলে ছোবল অত্যন্ত মারতো না !!!! ব্যাঙের কর্মে সাপকে আপন করে নিচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা!! অবাক ব্যাপার কোথায় গিয়ে দাঁড়ালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিষাক্ত গোখরাকে সর্মথন করে ।


আজাইরা কথা কমিয়ে এবার কাজের কথায় আসি নইলে আবার আমাকেও চিহ্নিত রাজাকার বলে নামকরণ করবে, এখন তো চারদিকে স্বাধীনতার বাতাস বইছে বাতাসের বিপরীতে গেলেই নৌকা ডুবিয়ে মজবুত মাইরের জন্য ভেজা কাঠ দিয়েই পিটানো হবে । কয়েক মাস আগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা তারপর শিক্ষকদের সিন্ডিকেট মিটিং তদন্ত কমিটি গঠন অতঃপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা অনির্দিষ্টকালের জন্য । সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাথায় বাংলা সিনেমার আকাশ ভেঙ্গে পড়লো ক্যান তারা সাধারণ হলো অসাধারণ মাইনে রঙ্গিন শিক্ষার্থী হইলো না। বিশ্ববিদ্যালয় হলো রঙ্গিন ক্যানভাস বিভিন্ন রঙ নিয়ে সবাই লুটুপুটু খাবে বেহুদা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বেইল আছে নাকি? নাই কোন বেইল নাই । রঙ্গ নাই তো এই স্বাধীনতার পক্ষের মাসে কোন দর নাই সবই ক্র্যাপ মাল । যাই হোক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরা ব্যাঙের লম্পজম্পে তাদের শিক্ষা জীবন জান্নামে গোলাম আজমের সহকর্মী হওয়ার প্রহর গুনছে তাতে আমার কি?? আমার শিক্ষাজীবন সাপের ছোবল খেতে খেতে পার করে দিয়েছি ।

শেষ কথাই সব কথা তাই শেষ কথাই বলি, খুলানা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী ছিন্নমূল শিশুদের জন্য তাদের ক্যাম্পাস আঙ্গিনায় “ছায়াবৃত্ত” নামক একটি স্বেচ্ছা সেবামূলক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতো । বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়াতে এবং হল বন্ধ করে দেওয়াতে সেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে বিভিন্ন শহরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে ও ক্যাম্পাসে “ছায়াবৃত্ত” এর শিক্ষাকার্যক্রম ছিন্নমূল শিশুদের জন্য পরিচালনা করতে পারছে না বিভিন্ন রঙ্গিন ব্যাঙদের জন্য । সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা, “ছায়াবৃত্ত” এর ছিন্নমূল শিশুদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপরকরণ ক্যাম্পাস চত্ত্বরে একটি বাক্সে রক্ষিত আছে যা তারা আনতে পারছেনা বিভিন্ন রঙ্গিন পশুদের নজরদারীতে । তাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ব্যতিত অন্য কোন স্থানে “ছায়াবৃত্ত” এর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না ।

এতে একটা বিষয় দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অংশের কলুষিত উগ্র ছাত্ররাজনীতির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি বেশ কিছু ছিন্নমূল শিশু যারা “ছায়াবৃত্ত” এর মাধ্যমে শিক্ষা পাঠ পেতো তারও তাদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । কারণ, প্রজন্ম যদি শিক্ষিত হয় তাহলে রঙ্গিন রঙ্গিন রুই কাতলারা অনেক কিছুই হারাবে, ব্যাঙেরা হয়ত ভবিষ্যতে লম্পজম্প করতে পারবে না । এখন একটাই প্রশ্ন এই বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকরা, শিক্ষার্থীরা কোন রঙ্গিন গরুর পালিত পশু না হয়ে কিংবা এনজিও না খুলে কি দেশের মানুষের জন্য কোন ভালো কাজ করতে পারবে না??? দেশের উন্নয়নে অংশ গ্রহণ করতে পারবে না??
নাকি সাধারন নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে গেলে বড় বড় হায়েনা ও নোংরাদের পা চাটতে হবে????

সাধারণ হওয়াতে আমাদেরও কি পা চাটা বাধ্যতামূলক????


২৩.০৫.১০
ফয়সল অভি
চট্টগ্রাম

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন