সোমবার, ৩১ মে, ২০১০

মহান ও মহৎ ছাত্রলীগের দায় নিয়ে রাবির ছেলেরা হলো কুলাঙ্গার

ছাত্রীদের রক্ষায় বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে না আসার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে। দুপুরের দিকে ক্যাম্পাস মোটামুটি নীরব থাকে এবং এ সময় কোনো অঘটন ঘটলে তার কোনো দায়দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেবে না বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগের বেপরোয়া চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং ছাত্রী লাঞ্ছনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
জানা যায়, সম্প্রতি ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে সাধারণ ছাত্রদের কাছ থেকেও গণহারে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। ক্যাম্পাসে চলাচলরত ছাত্রীদের ব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া, নির্জন এলাকায় পেলে ছাত্রীদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের জানমাল রক্ষায় এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
গত ১০ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের সবগুলো আবাসিক হলে এ নোটিশ টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, দুপুরের দিকে ক্যাম্পাসে তুলনামূলক শিক্ষার্থী কম থাকে। এ সময় আবাসিক ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে বের না হওয়ার পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে। নোটিশে বলা হয়, যদি কোনো ছাত্রী এ সময় ক্যাম্পাসে বের হয় এবং দুর্ঘটনা ঘটে তবে তার দায়দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেবে না।
এ দিকে ছাত্রলীগের অপকর্ম নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ না নিয়ে এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনেদুপুরে ছাত্রীদের চলাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই বিস্মিত হয়েছেন। কোনো সভ্য দেশে এটি মেনে নেয়া যায় না বলে মত প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী জানান, রাতে ছাত্রীদের বাইরে বের হওয়ার নিষেধাজ্ঞার কথা শুনেছি, কিন্তু এভাবে ভরদুপুরে হলের বাইরে বের হতে না দেয়ার কথা কোনো দিন শুনিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা মেনে নেয়া যায় না।
জানা যায়, ছাত্রলীগের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে। হলের সাধারণ ছাত্রদের কাছ থেকে যখন যার কাছ থেকে খুশি ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে বসে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় রুমে ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন সিগারেট দিয়ে সেকা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এক ছাত্রকে পুলিশে তুলে দেয় ছাত্রলীগ এবং অভিভাবককে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনতে হয়। ছাত্রীদের ব্যাগ, কান ও গলার অলঙ্কার ছিনিয়ে নেয়াসহ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনাও উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যায়। সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটলেও এর কোনো প্রতিকার না হওয়ায় এ প্রবণতা আরো বেড়ে যেতে থাকে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, পুলিশ এবং প্রশাসনের সামনেই এসব ঘটনা ঘটলেও তারা সাধারণ ছাত্রদের রক্ষায় কোনো ভূমিকা পালন করছে না।


অতপর কি দাড়ালো, মহা ও মহৎ ছাত্রলীগের হাসিনা কতৃক লাল টিকেটের কারণে ছাত্রীরা বেলা দুটো থেকে ৪ পর্যন্ত স্বাধীন চলাচল করতে পারবে না, করলেও যদি যদি ছাত্রলীগ বা কোন পুরুষ পশু কতৃক কোন অঘটন ঘটে তবে তার দায় প্রশাসনের নয় । তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে, মহান ও মহৎ ছাত্রলীগের দায় বহন করবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্ররা কারণ তারা প্রতিবাদী হয়ে ছাত্রলীগের এই অন্যায় তাদের ক্যাম্পাস থেকে রুখতে পারছে না তাই তারা কুলাঙ্গার হইয়া রাবি'র ছাত্র হইয়া শিক্ষা লাভ করিতে লাগিল ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন